বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকর

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার আসামি ক্যাপ্টেন (বনখাস্তকৃত) আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিটে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

এসময় কারা অধিদপ্তরের আইজি (প্রিজন্স), ঢাকার সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসি কার্যকর উপলক্ষে বৈরী আবহওয়া ও করোনার সতর্কতা উপেক্ষা করে কারাফটকে উপস্থিত হয় বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। তারা ফাঁসি কার্যকর করার পর আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করে।

এর আগে শনিবার দুপুরে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মহড়া করে জল্লাদরা। জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে এই জল্লাদ টিমটিতে রয়েছেন মনির ও সিরাজ। ফাঁসির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই শুক্রবার রাতে তার স্বজনরা কারাগারে শেষ দেখা করেছেন।

এদিকে, নতুন স্থাপিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম ফাঁসি। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলায় মোট ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর হল। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান ও মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রায় কার্যকরের আগেই ২০০১ সালের জুনে জিম্বাবুয়েতে মারা যান আজিজ পাশা। পলাতক রয়েছে খন্দকার আব্দুর রশিদ, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন।

কারা কর্তৃপক্ষ আহবানে গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর মাজেদের স্ত্রী ডা. সালেহা বেগম, মাজেদের এক ভাই, এক বোন ও একজন ভাতিজাসহ ৫ জন কারাগারে শেষ দেখা করেন। আজ রাতে ফাঁসি কার্যকর করার আগেও পরিবারের সদস্যদের কারা ফটকে আসতে বলা হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর কারাগারের বন্দী সেলগুলো লক করে দেওয়া হয়। কারাগারের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসে কারণে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে যতটুকু সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যায়-তাই করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত মাজেদ ২৩ বছর ধরে পলাতক থাকলেও ৬ এপ্রিল মধ্যরাতে রিকশায় ঘোরাঘুরির সময় তাকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। পরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সিটিটিসি। এরপর মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ৮ এপ্রিল মৃত্যর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আব্দুল মাজেদ। প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি বাতিল করে দেয়ার পর সেই চিঠিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। তার পরেই কারা কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী ফাসিঁ কার্যকর করার পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করে।