বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বেই সব জেলার মুসুল্লি অংশ নিতে পারবেন

আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি সভা মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুর সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু নাসার উদ্দিন জানান, গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে এবার দুই পর্রেব প্রতি পর্বে ৬৪ জেলার মুসুল্লিগণ অংশ গ্রহণ করবেন। আগমী প্রথমপর্ব ১০ জানুয়ারী শুরু হয়ে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ১২ জানুয়ারি শেষ হবে। প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীগণ অংশ গ্রহণ করবেন। চারদিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদ অনুসারীগণ অংশ নেবেন।

বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য ৮৭টি ভিত্তা তৈরি করা হবে। এ ছাড়া ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য থাকবে ২০টি প্রবেশ পথ নির্মাণ করা হবে।

এছাড়া সভায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতসহ মুসল্লিদের বিভিন্ন সেবা মূলক কর্মকান্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আগামি ৭ জানুয়ারির মধ্যে ময়দানের আনুষাঙ্গিক যাবতীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তিনটি গ্রীড লাইন থেকে সংযোগ এবং ৪টি জেনারেটর স্ট্যান্ডবাই থাকবে। মুসুল্লিদের পারাপারের সুবিধার্থে বাংলাদেশ সেনাবাহীনি তুরাগ নদেরিউপর ৭টি পল্টুন সেতু বা ভাসমান সেতু নির্মাণ করবে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ৩০টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। দুইটি হটলাইনসহ ৫০টি টেলিফোন সংযোগ দেয়া হবে। মুসুল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন, ট্রেনে কোচ বাড়ানো হবে এবং সকল ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করবে। রেল স্টেশনে মুসল্লির জন্য আলাদা অস্থায়ী বিশ্রামাগার ও শতাধিক টয়লেট তৈরী করা হবে।। মশা ও দুগন্ধ নিধনে ইজতেমা শুরুর ৫ দিন আগে থেকে মাঠে ও আশপাশ এলাকায় স্প্রে করা হবে। ধূলাবালি নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সাহায্যে পানি ছিটানো হবে। মুসল্লিদের প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য ২০টি পথ তৈরী করা হবে। পুরো ইজতেমা ময়দানকে ৮৭টি খিত্তায় ভাগ করা হবে। এতে ৬৪টি জেলার মুসুল্লিরা খিত্তা অনুসারে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ঢাকা জেলার জন্য ২৩টি খিত্তা এবং ময়মনসিংহ জেলার জন্য দুইটি খিত্তা রাখা হবে। বাকী সকল জেলা একটি করে খিত্তায় থাকবে। বসানো হবে সাড়ে চার’শ সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ উপস্থিত থাকবেন। বিজিবি সদস্য স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে। ৩১টি টয়লেট বিল্ডিংএ ৮ হাজার ৩৩১টি টয়লেট থাকবে। ১৭টি গভীর নলকুপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হবে।

প্রস্তুতি সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু নাসার উদ্দিন, ইজতেমা ময়দানের জিম্মাদার মুরুব্বি মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মুরুব্বি জিএম ইউসুফ, প্রকৌশলী নূর হোসেন, হাজী সেলিম, হাজী রেজাউল করিম, ড. আলী আজগরসহ সরকারের বিভিন্ন সেবা মূলক দপ্তরের কর্মকর্তা, আইনশৃংখলা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।